শবে বরাতের রোজা রাখা কি জায়েজ ? এর নিয়ত এবং ফজিলত

শবে বরাতের রোজা

আপনি কি শবে বরাতের রোজা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান ? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় প্রবেশ করেছেন আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা শবে বরাতের রোজার আছে কি রোজা কয়টি রাখা উত্তম রোজা কত তারিখে এবং কবে থেকে। এছাড়াও শবে বরাতের রোজা রাখা কি জায়েজ? শবে বরাতের রোজা রাখার ফজিলত এবং রোজার নিয়ত বাংলা এবং আরবিতে সবকিছু নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। শবে বরাতের বিশেষ আমল এবং নামাজ ও রোজার নিয়ম ফজিলত সমূহ ২০২৪

তাই শবে বরাতের রোজা সম্পর্কে খুঁটিনাটি সবকিছু জানতে আমাদের আজকের এই পোস্টটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন।

শবে বরাতের রোজা আছে কি ?

সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফের একটি হাদিস থেকে বর্ণিত রাসূলের কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , যখন শাবানের মধ্য দিবস আসে তখন তোমরা নফল ইবাদত করো ও দিনে রোজা রাখো অর্থাৎ শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে ইবাদত করতে হবে এবং ওই রাতেই সাহরি খেয়ে পর দিন ১৫ তারিখ রোজা রাখতে হবে।

তাছাড়াও কেউ ইচ্ছা করলে প্রতি আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখা সর্বোত্তম। একে আইয়ামে বীজের রোজা বলা হয়। এই তিনটি রোজা রাখলে শবে বরাতের রোজা পালন হয়ে যায়।

এছাড়াও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আরবি রজব মাস এবং শাবান মাসে বেশি বেশি আমল করতেন এবং সবাইকে উৎসাহ দিতেন। তিনি কখনো কখনো দশটি নফল রোজা ,কখনো বিশটি নফল রোজা, কখনো বা তারও বেশি নফল রোজা রাখতেন।

শবে বরাতের রোজা কয়টি রাখা উত্তম

আপনাদের অনেকেরই প্রশ্ন থাকে শবে বরাতের রোজা কয়টি ? এর সঠিক উত্তর হল ১টি

হাদিসে আছে রাসূলের কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , যখন শাবানের মধ্য দিবস আসে তখন তোমরা নফল ইবাদত করো ও দিনে রোজা রাখো অর্থাৎ শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে ইবাদত করতে হবে এবং ওই রাতেই সাহরি খেয়ে পর দিন ১৫ তারিখ রোজা রাখতে হবে। তা থেকে বোঝা যায় শবে বরাতের রোজা একটি।

তবে যারা প্রতি আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ নফল রোজা রাখেন তাদের জন্য আলাদাভাবে শবে বরাতের রোজা রাখার দরকার নেই। করুন এর মধ্যেই আছে শবে বরাতের রোজা।

শবে বরাতের রোজা কত তারিখে

রাতে শবে বরাতের রোজা আরবি সাবান মাসের ১৪ তারিখ নফল ইবাদত করার পর ওই রাতেই সাহরি খাওয়ার মাধ্যমে ১৫ তারিখ দিনে শবে বরাতের রোজা পালন করতে হয়।

শবে বরাতের রোজা কবে থেকে

রাতে শবে বরাতের রোজা আরবি শাবান মাসের ১৪ তারিখ অর্থাৎ ইংরেজি চলতি ফেব্রুয়ারী মাসের ২৫ তারিখ রবিবার দিবা গত রাতে নফল ইবাদত করার পর, ওই রাতেই সাহরি খাওয়ার মাধ্যমে ১৫ তারিখ দিনে শবে বরাতের রোজা পালন করতে হয়। তাছাড়া আপনি চাইলে ১৩,১৪ ও ১৫ তারিখ এই তিন দিন রোজা রাখতে পারেন এটা সর্বোত্তম।

শবে বরাতের রোজা রাখা কি জায়েজ ?

শুধু শবে বরাত কেন্দ্রিক হওয়া অর্থাৎ শুধু এই রাতে নফল ইবাদত এবং পরের দিন রোজা রাখা এটি বিদআত। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা রাখতেন। এরকম যদি কেউ বেশি বেশি রোজা রাখেন এবং ফরজ গুলো ঠিক রাখেন। তিনি যদি শবে বরাতের রাতে অর্থাৎ শাবান মাসের মধ্য রজনীতে নফল ইবাদত করেন এবং পরদিন রোজা রাখেন তাদের জন্য জায়েজ। এই রাতে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমাপ্রার্থীকে ক্ষমা করেন, রহমত প্রার্থীকে রহমত করেন।

আর যারা পুরো বছর ফরজ পালন করবে না এবং শাবান মাস কে গাফলতির সঙ্গে কাটাবে। তবে শবে বরাতের রাতে নফল ইবাদত করবে এবং পরেরদিন রোজা রাখবে অর্থাৎ যারা ফরজ বাদ দিয়ে নফলের প্রতি বেশি ঝুঁকবে তাদের জন্য শবে বরাত কোনো কল্যানকর হবে না।

শবে বরাতের রোজা রাখার ফজিলত

শবে বরাতের রোজা রাখার ফজিলত 1 শবে বরাতের রোজা

হাদীস শরীফে আরবি বছরের শাবান মাসের এক থেকে সাতাশ তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও শাবান মাসের ১৫ তারিখ রোজা রাখার নিৰ্দেশনা পাওয়া যায়

হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পনেরো শাবানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা তা ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং পরদিন রোজা রাখ। -ইবনে মাজা, হাদিস- ১৩৮৪

শবে বরাতের রোজার নিয়ত আরবিতে

শবে বরাতের আরবিতে রোজা রাখার নিয়ত হলো:- نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা নিয়্যত করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

শবে বরাতের রোজার নিয়ত বাংলায়

শবেবরাতের বাংলায় রোজা রাখার নিয়ত হলো :- আমি আজ রোজা রাখার নিয়ত করলাম। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ: খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৩৭৮)

শবে বরাতের রোজা রাখা কি জায়েজ ? এর নিয়ত এবং ফজিলত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to top