ঢাকা-১০ আসনে জয়ী হয়েছেন নায়ক ফেরদৌস। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৯৮টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী শামসুল আলম আম মার্কায় ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ২৫৭ টি ।
রবিবার ৭ই জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। সতস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হন শোবিজ তারকারাও। এবারের নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন নায়ক ফেরদৌস আহমেদ। এই প্রথম নির্বাচনে অংশ নিয়েই বিপুল ভোটে জয় পেলেন নায়ক ফেরদৌস।
ফেরদৌস এই নির্বাচনে নৌকা মার্কায় মোট ভোট পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৯৮টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী শামসুল আলম আম মার্কায় মোট ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ২৫৭ টি ।
ঢাকা-১০ আসনে রাজধানীর ধানমন্ডি, হাজারীবাগসহ আশপাশের এলাকা নিয়ে গাঠিত। এই নির্বাচনে ফেরদৌসের প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন চারজন।
তারা হলেন- ন্যাশনাল পিপলস পার্টির কে এম শামসুল আলম আম মার্কা, জাতীয় পার্টির হাজী মো. শাহজাহান লাঙ্গল মার্কা , বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের (মুক্তিজোট) শাহরিয়ার ইফতেখার ছড়ি মার্কা এবং বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) মো. বাহারানে সুলতান বাহার টেলিভিশন মার্কা ।
নির্বাচন প্রচারণায় ফেরদৌস বলেছিলেন, ৭ জানুয়ারি ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে নৌকায় ভোট দিয়ে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও আমাকে অনেক সহযোগিতা করছেন।
এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০আসনে মোট ১১টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে আটটিই বাতিল করে দিয়ে ছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম।
ধানমন্ডি, নিউ মার্কেট, কলাবাগান, হাজারীবাগ এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা ১০ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়ক ফেরদৌস আহমেদ। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেছেন জাকের পার্টি থেকে মো. হুমায়ুন কবীর ও জাতীয় পার্টি থেকে হাজী মো. শাহজাহান।
নায়ক ফেরদৌস ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এইচএসসি পাশ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতক পাশ করেছেন।
নায়ক ফেরদৌস এপার বাংলা ও ওপার বাংলার সবথেকে জনপ্রিয় নায়কদের একজন ছিলেন।
রবিবার ৭ই জানুয়ারী সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারাদেশে ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে। এ সময়ে দেশের কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন গন্ডগোল হলেও মোটামুটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে । ৩০ থেকে ৩৫ জায়গায় ভোট কেন্দ্রের বাইরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। অনেক জায়গার ভোটকেন্দ্রের আশে পাশে ককটেল বিস্ফোরণেরও ঘটনা ঘটেছে। অনিয়মের কারণে সাতটি কেন্দ্রে ভোট বাতিল করা হয়। জাল ভোটের চেষ্টা করার জন্য ১৫ ব্যক্তিকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কারচুপি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী।
নায়ক ফেরদৌস এর মত এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নৌকা প্রার্থী হিসেবে নিয়ে অংশগ্রহণ করেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি মাগুরার-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে এবং হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে এবার প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পরিচিত মুখ ব্যারিস্টার সুমন। তিনি এক লাখ ভোটের ব্যবধানে বর্তমান বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে পরাজিত করেছেন।
এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। এছাড়া হিজড়া ভোটারের সংখ্যা ৮৫২ জন। রবিবারের ভোটে সারা দেশের ২৯৯ আসনে মোট প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৯৭০ জন।
এদের মধ্যে ১ হাজার ৫৩৪ জন দ্বাদশ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ২৮টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী। বাকি ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নওগাঁ-২ আসনে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ওই আসনে ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে। এই আসনে নির্বাচন বাতিল করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। নিয়ম অনুযায়ী কোন আসনের প্রার্থী নির্বাচনের পূর্বে মারা গেলে ওই আসনের ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়। তবে এ আসনের ভোটগ্রহণ পরে অন্য সময় অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে বিএনপিসহ আরো ১৬ টি রাজনৈতিক দল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে। দলটি সরকার পতনের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে সফলতা না পেয়ে নির্বাচনের দুই মাস আগ থেকে সরকারকে চাপে ফেলতে হরতাল-অবরোধের পথ বেছে নেয়। এতে কোনো লাভ না হলে তারা ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দেয় ।
আরো পড়ুন:- মাশরাফি ১ লাখ ৮৫ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী