আপনারা কি নাজাতের ১০ দিনের দোয়া ও ফজিলত জানতে চান ? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় প্রবেশ করেছেন।আজকের এই আলোচনায় আমরা নাজাতের ১০ দিনের দোয়া ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। রোজা রেখে কি করা যায় আর কি করা যায় না
নাজাতের ১০ দিন অর্থ কি
রোজার মাসকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ১০দিন কে বলা হয় রহমতের ,পরের ১০দিন কে বলা হয় মাগফেরাতের এবং শেষ ১০দিনকে বলা হয় নাজাতের।রহমত ও মাগফেরাতের পর আসে নাজাত যা বান্দার পাপমোচন ও ক্ষমা চাওয়ার সময়। নাজাত শব্দের অর্থ মুক্তি, অব্যাহতি, রেহাই। রমজানের শেষ ১০ রোজাকে নাজাত বলা হয়। রমজান মাস নিয়ে ক্যাপশন, এসএমএস ও স্ট্যাটাস পিক
নাজাতের ১০ দিনের দোয়া
হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, ”সৎকর্মশীলতার দিক দিয়ে আল্লাহর দৃষ্টিতে রমজানের শেষ দশকের চেয়ে মহৎ ও প্রিয় আর কোন দিন নেই” (দলিল:- মুসনাদ আহমদ বিন হাম্বল, ২য় খণ্ড)
এই দশকেই আসে সেই সৌভাগ্য রজনী অর্থাৎ লাইলাতুল কদর। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, একবার আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম-হে আল্লাহর রাসুল! আপনি বলে দিন আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি তাহলে আমি কোন দোআ পড়বো।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, তুমি এই দোয়া পড়বে- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি।’
বাংলা অর্থ:- হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসো অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও। (দলিল:- মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)
এই দশকের আরেকটি দোয়া হলো:- ‘রাব্বানা মা খালাকতা হাযা বাতিলান সুবহানাকা ফাকিনা আযাবান্নার।’
বাংলা অর্থ:- ‘হে আমাদের প্রভু-প্রতিপালক! তুমি এ বৃথা সৃষ্টি করনি। তুমি পবিত্র। সুতরাং তুমি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা কর।’ (দলিল:- সুরা আলে ইমরান: আয়াত ১৯১)
আরেকটি দোয়া:- ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাঁও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাঁও ওয়াকিনা আযাবান্নার।’ বাংলা অর্থ:- ‘হে আমাদের প্রভু-প্রতিপালক! আমাদেরকে ইহকালেও এবং পরকালেও কল্যাণ দান কর আর আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা কর।’ ( দলিল:-সুরা বাকারা: আয়াত ২০১)
দোয়া:- ‘রাব্বি ইন্নি যালামতু নাফসি ফাগফিরলি।’
বাংলা অর্থ:- ‘হে আমার প্রভু! নিশ্চয় আমি আমার আত্মার ওপর অত্যাচার করেছি। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা কর।’ ( দলিল:-সুরা কাসাস: আয়াত ১৬)
দোয়া:- ‘রাব্বানাগফিরলানা ওয়ালি ইখওয়ানিনাল্লাজিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি।’
বাংলা অর্থ:- ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ক্ষমা কর এবং যারা আমাদের আগে যারা ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে, তাদেরকেও ক্ষমা কর।’ ( দলিল:- সুরা হাশর : আয়াত ১০)
রমজানের শেষ দশকে আমাদের বেশি বেশি আমল করা উচিত। যাতে আল্লাহ আমাদের দোয়া গ্রহণ করে আমাদের সকল গুনাহ মাফ করে দেন। আমীন
নাজাতের ১০ দিনের ফজিলত
এই দশকের ফজিলত গুলো হলো:- নাজাতের এই দশ দিনের যেকোনো একদিন লাইলাতুল কদর পাওয়া যায়। এই রাত হাজার মাস থেকেও উত্তম। এই রাতে যে ব্যক্তি ইবাদত বন্দেগী করবে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।
এই রাতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগী করতেন, যা অন্যান্য রাতে তেমন একটা দেখা যেত না। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি এ রাতে কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, সালাত ও দোয়ার মাধ্যমে জাগ্রত থাকতেন এরপর সেহরি করতেন।
রমজানের শেষ দশকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম রাত্রি জাগতেন এবং পরিবারের সকলকে জাগিয়ে দিতেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দশ দিন রাতে মোটেও নিদ্রা যেতেন না। পরিবারের সকলকে তিনি রাতে ইবাদত বন্দেগী করার জন্য জাগিয়ে দিতেন।
এই রাতের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজাতের এই ১০ দিন মসজিদে ইতিকাফ করতেন।