রোববার হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমনকে প্রধান অথিতি করে উপজেলা আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা করায় নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল হয়েছে।
হবিগঞ্জের উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দাবি, সভায় এমপি ব্যারিস্টার সুমনের উপস্থিতি নয়, মূলত সংসদ নির্বাচনে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের সমর্থকদের বক্তৃতা দেওয়া নিয়ে এ হট্টগোল দেখা দেয় ।
ব্যারিস্টার সুমনের উপস্থিতি নিয়ে হট্টগোল
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সামাদ মাস্টার বলেন, সভায় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রশ্ন করে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী কি স্বতন্ত্র এমপিকে সঙ্গে নিয়ে চলার অনুমতি দিয়েছেন? যদি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি থাকে তবেই তাকে নিয়ে আমরা চলবো। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তিনি বলেন, মূলত স্বতন্ত্র এমপি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় মতবিনিময় সভা করায় এ উত্তেজনা দেখা দেয়। পরবর্তীতে দলের সিনিয়র নেতারা পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এম আকবর হোসেন জিতু বলেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক চুনারুঘাট আসছেন। নবনির্বাচিত এমপি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের আমন্ত্রণেই তিনি আসছেন। প্রথমে ওই অনুষ্ঠানে আমাদের যাওয়ার কথা ছিল না। কারণ, আমাদের বিষয়টি জানানো হয়নি। পরবর্তীতে যেহেতু আমাদের প্রতিমন্ত্রী আসছেন তাই আমরা অনুষ্ঠানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। ওই অনুষ্ঠান সফল করতে রোববার মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি করা হয় নতুন এমপি ব্যারিস্টার সুমনকে।
জিতু বলেন, তার (ব্যারিস্টার সুমন) উপস্থিতি নিয়ে কোনো হট্টগোল হয়নি। কারণ, ব্যানারেইতো প্রধান অতিথি হিসেবে তার নাম ছিল। তাছাড়া যেহেতু প্রতিমন্ত্রী তার আমন্ত্রণেই আসছেন, তাই তাকে নিয়ে অনুষ্ঠান সফলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
হট্টগোলের বিষয়ে তিনি বলেন, হট্টগোল হয়েছে রাতে সভার প্রায় শেষ পর্যায়ে।মূলত নৌকা সমর্থক ও ঈগল প্রতীকের সমর্থকের মধ্যে বক্তৃতা দেওয়া নিয়ে হট্টগোল হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দলীয় একটি সূত্র থেকে জানা যায়, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের চুনারুঘাট আগমন উপলক্ষ্যে রোববার উপজেলা পরিষদ এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। অনুষ্ঠানে এ আসনের নবনির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমনকে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সভাপতিত্বে বিকাল ৪টায় ওই সভা শুরু হয়। সভার একপর্যায়ে সংসদ সদস্যের বক্তব্য দেওয়ার সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক সাথী মুক্তাদির চৌধুরী সভাপতির কাছে জানতে চান, সংসদ সদস্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের যে মতবিনিময় সভার আহ্বান করা হয়েছে, সেটি দলীয় কোনো সভার সিদ্ধান্ত ছিল কি না? ব্যারিস্টার সুমনকে দল ( আওয়ামী লীগ) গ্রহণ করেছে কি না? না হয়ে থাকলে তার সঙ্গে মতবিনিময় কেন? সাংস্কৃতিক সম্পাদকের এ প্রশ্নের পরপরই নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়।
এদিন হট্টগোল শুরুর পর সভাপতি আকবর হোসেন জিতু নেতাকর্মীদের থামানোর চেষ্টা করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তেই এ সভা আয়োজন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এ ছাড়া সংসদ সদস্য নিজে সবার সঙ্গে মতবিনিময় করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখনো নেতাকর্মীরা হট্টগোল করতে থাকেন। একপর্যায়ে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সুমন নিজেই মাইক নিয়ে নেতাকর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তার বক্তব্যের সময় নেতাকর্মীরা একে অপরের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করেন। পরে দলের সিনিয়র নেতারা হস্তক্ষেপ করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এই মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কাদির লস্কর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক সরকার, উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি আবেদা খাতুন সহ আরো নেতা কর্মীরা।
আরো পড়ুন:- আজ থেকে শুরু হলো বাণিজ্য মেলা