আজ ঢাকার কেরানীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর রাসেল হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাব্বি সহ ১২ জন গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন আফতাব উদ্দিন রাব্বি(৩৫), সজীব, রাজীব, হীরা, ফিরোজ, আলমগীর ঠান্ডু, আমির (৩৮), রনি, দেলোয়ার দেলু, শিপন, মাহফুজ, মোঃ রতন শেখ।
আজ সকালে এক সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
রাসেল হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাব্বি সহ ১২ জন গ্রেফতার
রাসেলের মৃত্যুর পর রাব্বির অফিসে নিহত রাসেলের উপর নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। দেশ জুড়ে এই ভিডিওতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডে নিহত রাসেলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় রাব্বিকে প্রধান আসামী করে ১৩ জনসহ আরো অজ্ঞাত নামা ১০-১৫ জন আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও ঘটনায় জড়িত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ একটি অভিযানিক টিম গঠন করে। হত্যাকাণ্ডের সংবাদ পাওয়ার পর কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ হত্যার ঘটনাস্থল অর্থাৎ রাব্বির অফিসে গিয়ে হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করে।
এরপর পুলিশ অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা ও ভাইরাল হওয়া ভিডিও থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের শনাক্ত করে এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে তারা ঝিনাইদা জেলার মহেশপুর থানার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বাঁশবাড়িয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাব্বি সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে আরও সাত জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। রাসেল হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাব্বি সহ ১২ জন গ্রেফতার
রাসেল হত্যা
গত ১০ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাতে রাব্বি তার বন্ধু রাসেলকে কেরানীগঞ্জ থানার পারভিন টাওয়ারের নিচ তলায় তার নিজ অফিসে ডেকে নেয়। অফিসে রাব্বি হাজির হলেই সেখানে উপস্থিত রাব্বির অন্যান্য সহযোগীরা রাতভর রাসেলকে লাঠি সোটা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রচন্ড মারধর করে এবং কেচি দিয়ে রাসেলের মাথার চুলও কেটে দেয়। একপর্যায়ে রাত দুটোর দিকে রাসেল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে, রাব্বির নির্দেশে তার বন্ধুরা রাসেলকে অজ্ঞান অবস্থায় তার বাসায় পৌঁছে দেয় এবং রাসেলের স্ত্রীকে এ বিষয়ে থানা পুলিশ বা অন্য কাউকে ঘটনার বিষয় না জানানোর জন্য হুমকি দেয়।
বাড়ি পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর রাব্বির শরীরের অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। একসময় রাব্বি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
রাসেল হত্যার কারণ
নিহত রাসেল প্রধান আসামি আফতাব উদ্দিন রাব্বির বন্ধু ছিল। আর্থিক লেনদেন কে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়। এতে রাব্বি ও তার সহযোগীরা সহযোগীরা তার উপর ক্ষুব্দ হয়ে গত ১০ জানুয়ারি তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।
অপরদিকে রাসেলের স্ত্রী সুমি বেগম ঘটনায় জড়িত রানা, রাকিব ও বাপ্পি সহ আরো পাঁচজন অনেকে গ্রেফতারের দাবী জানান। তারা নিহতদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য দাবি জানান। এছাড়াও তার স্বামীর লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য দাফন করার ব্যবস্থা করে এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও পুলিশের কাছে দাবি জানান।
আরো পড়ুন ;- নয় মামলায় জামিন পেলেন মির্জা ফখরুল