৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ আসনে আওয়ামী লীগ নেতারা সমর্থন দিচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে। এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এবার মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার। কিন্তু তার দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি বড় অংশ কাজ করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায়।
আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী হলেন সাবেক ডাক,টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী। তিনি এখন পর্যন্ত টাঙ্গাইল -৪ আসনে ৭ বার নির্বাচনের অংশগ্রহণ করেন, যার মধ্যে তিন বার জয়ী হন।
কিন্তু ২০১৪ সালে ৫ই ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি আলোচনা সভায় হজ, তাবলীগ জামাত, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সাংবাদিকদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন।
এর প্রেক্ষিতে তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে তিনি সংসদ সদস্য থেকে পদত্যাগ করেন।
তাই এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। বহিষ্কার হলেও দলের মধ্যে তার প্রভাব এখনও বিদ্যমান আছে। তাই আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ তার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন:- জাহিদ- জাহাঙ্গীরের দ্বন্দ্বে নির্বাচনে উত্তাল গাজীপুর
নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যারিস্টার সুমনের স্ত্রী
নির্বাচনী প্রচারণায় মাশরাফিকে ফুলের অভ্যর্থনা
আওয়ামী লীগ নেতারা সমর্থন দিচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে
গতকাল লতিফ সাহেব এলাকার বিভিন্ন জায়গায় গণসংযোগ করেন। দিনের শুরুতেই তিনি এলেঙ্গা লুৎফুর রহমান মতিন মহিলা কলেজে যান। কলেজের হলরুমে তিনি শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তৃতা রাখেন। সেখানে তিনি বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা, নারী শিক্ষা ও নারী জাগরণ বিষয় বক্তৃতা রাখেন।
এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নূরে আলম সিদ্দিকী। বক্তব্য শেষে তিনি উপজেলার কাজীবাড়ি ,কামান্না, রামপুর ,বল্লা ও রতনগঞ্জ এলাকায় গণসংযোগ করেন।
বিকেলে উপজেলার পটল বাজারে লতিফ সিদ্দিকীর ট্রাক প্রতীকের সমর্থনে নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে লতিফ সিদ্দিকীর সাথে উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের গত কমিটির সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান সহ স্থানীয় অনেক আওয়ামীলীগ নেতা।
বিকেলে উপজেলার পটল বাজারে লতিফ সিদ্দিকীর ট্রাক প্রতীকের সমর্থনে নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে লতিফ সিদ্দিকীর সাথে উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের গত কমিটির সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান সহ স্থানীয় অনেক আওয়ামীলীগ নেতা।
এছাড়া গত রোববার বিকেলে বল্লা কারনেসন হাইস্কুলে লতিফ সিদ্দিকীর বড় নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখেন তার ছোট ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বর্তমান সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী উত্তম।
তাদের সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদসহ আরো অনেক নেতা কর্মীরা।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র থেকে জানা যায় এবার টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় বর্তমানে আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও একজনসহ সভাপতি এই তিন সদস্যের কমিটি নিয়ে চলছে উপজেলা আওয়ামীলীগ।
এছাড়াও এবার বর্তমান সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খান এবার মনোনয়ন পাননি। তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যে যার মত নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করছেন। এ সম্পর্কে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে প্রকাশ্যে লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে কাজ করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মোল্লা সহ অনেক নেতা কর্মী।
স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে কাজ করছেন একথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মোল্লা।
আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন, বেশিরভাগ দলীয় লোক ট্রাকের পক্ষে নেমে পড়েছেন। আমি নিজেও আগে আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলাম ,এখন ট্রাকের পক্ষে আছি।
আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বলেন, বেশিরভাগ দলীয় লোক ট্রাকের পক্ষে নেমে পড়েছেন। আমি নিজেও আগে আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিলাম ,এখন ট্রাকের পক্ষে আছি। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোশারুল ইসলাম তালুকদার বলেন যেসব নেতা কর্মী দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তাদের সম্পর্কে জেলা নেতাদের জানানো হয়েছে। তারা সতর্ক করা শুরু করেছেন।
তিনি আরো বলেন যারা আওয়ামী লীগ করেন তাদের সবার দায়িত্ব নৌকা প্রতীক এর সম্মান রক্ষা করা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফ সিদ্দিকী বলেন এ আসনের মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হছেন।
তিনি বলেন, সবাই উৎসবের সঙ্গে কাজ করছেন। এছাড়া অনেকে বুকে নৌকার ব্যাচ নিয়ে ঘুরছেন কিন্তু মনের মধ্যে ট্রাক।
এই আসনে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ছাড়াও আরো সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫৫৬ জন।
তবে আওয়ামীলীগ পদপ্রার্থী মাজহারুল ইসলাম নৌকা মার্কায় তার বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন।