আপনি কি শবে বরাতের আমল, নামাজ, রোজা, ফজিলত দোয়া সমূহ ২০২৪ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় প্রবেশ করেছেন। আজকে আমরা শবে বরাত কবে ২০২৪, শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে, শবে বরাত ২০২৪ ছুটি, শবে বরাত কি ?, শবে বরাতের আমল, শবে বরাতের নফল নামাজ ,শবে বরাতের দোয়া সমূহ, শবে বরাতের রোজা ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করবো। মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার রুটিন ২০২৪ ডাউনলোড
আশা করি আপনারা শবে বরাত সম্পর্কে সকল ধারণা এই পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন।
শবে বরাত কবে ২০২৪
আগামী ২৫ শে ফেব্রুয়ারি রবিবার পালন করা হবে শবে বরাত। এটি মুসলমান ধর্মালম্বীদের জন্য একটি পবিত্র রাত। এই রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের বিশেষভাবে ক্ষমা করেন। এই রাতে মুসলমানগণ আল্লাহর সন্তুষ্ট অর্জনের জন্য বিভিন্ন ধরণের আমল করে থাকে। হিজরি বছরের অষ্টম মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে সাধারণত শবে বরাত বা মধ্য-শা’বান বা লাইলাতুল বরাত পালন করা হয়। এই দিনে মানুষ বিভিন্ন ধরণের নফল ইবাদত ও আল্লাহর জিকির করে।
শবে বরাত ২০২৪ কত তারিখে
ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক ঘোষিত শবে বরাত ২০২৪ পালিত হবে চলতি ফেব্রুয়ারীর ২৫ তারিখ রবিবার রাতে। এই শবে বরাতকে কেন্দ্র করে মুসলমান ধর্মাবলম্বীগণ আল্লাহর কাজ থেকে ক্ষমা পাওয়ার আশায় এই রাতে ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল হয়।
শবে বরাত ২০২৪ ছুটি
শবে বরাত কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে একদিনের ছুটি পালিত হয় ব্যবহার মুসল্লীগণ ২৫ তারিখ রবিবার রাতে আল্লাহর ইবাদতের মাধ্যমে সারারাত জেগে থাকবে এবং পরের দিন ২৬ তারিখ সোমবার সকল ধরনের স্কুল কলেজ এবং অফিস আদালত বন্ধ থাকবে। ২৭ তারিখ মঙ্গলবার থেকে স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত, খোলা হবে।
শবে বরাত কি ?
”শব” শব্দের অর্থ রাত এবং ”বরাত” শব্দের অর্থ মুক্তি অর্থাৎ শবে বরাত অর্থ হল মুক্তির রাত। এই রাতে আল্লাহ তার পাপী বান্দাদের ক্ষমা করেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। এজন্য এ রাতকে শবে বরাত বলা হয়।
শবে বরাত কে আরবিতে লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বান বা মধ্য শা’বানের রজনী বলা হয়। হিজরি বছরের অষ্টম মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে সাধারণত শবে বরাত বা মধ্য-শা’বান বা লাইলাতুল বরাত বলা হয়।
শবে বরাতের আমল
শবে বরাতকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট কোন আমল হাদিসে বলা হয়নি। মুমিন মুসলমানগণ বিভিন্ন ইবাদত- বন্দেগী, তওবা – ইস্তেগফারের মাধ্যমে এই রাতটি অতিবাহিত করেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এই রাতে অধিক পরিমাণে ইবাদত বন্দেগি করতেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এই রাতে যেসব আমল করতেন তা নিচে দেওয়া হল :-
শবে বরাতের নফল নামাজ
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর রাতে দীর্ঘতায়াতের মাধ্যমে নফল নামাজ পড়া সম্পর্কে হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন , কোন এক রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম হঠাৎ নামাজে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সেই নামাজে তিনি এত দীর্ঘ সময় সিজদায় ছিলেন যে আমার মনে হচ্চিল তিনি মারা গেছেন। আমি নিশ্চিত হওয়ার জন্য এগিয়ে গিয়ে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম এবং সাথে সাথে আঙ্গুলটি নড়ে উঠলো।
এরপর নামাজ শেষ করে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আমাকে বলেন, তুমি কি ভেবেছো যে আল্লাহর নবী তোমার উপর কোন অবিচার করেছে? আমি এর কিছুই ভাবিনি। আমি ভেবেছি আপনি দীর্ঘক্ষণ সেজদায় থাকার কারণে আল্লাহ আপনাকে উঠিয়ে নিয়েছেন কিনা।
এরপর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আমাকে বলেন, হে আয়েশা! তুমি কি জানো আজকের এই রাত সম্পর্কে। এই রাতটি হলো শাবান মাসের পঞ্চদশ রজনী। এ রাতে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের বিশেষ দৃষ্টিতে দেখেন। ক্ষমা প্রার্থীদের ক্ষমা করেন। রহমত প্রার্থীদের রহমত এবং পরশ্রীকাতর ব্যক্তিদের আপন অবস্থায় ছেড়ে দেন।
শবে বরাতের দোয়া সমূহ
আল্লাহর রহমত ও ক্ষমার লাভের আশায় এই রাতে নিম্নে বর্ণিত দোআ করতে হয়।
১) اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَ ضَلَعِ الدَّيْنِ وَ غَلَبَةِ الرِّجَالِ
বাংলায় উচ্চারণ:- আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি ওয়াল আজযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি ওয়া দালায়িদ দাইনি ওয়া গালাবাতিল রিজালি।’
২) اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِن جَهْدِ الْبَلَاءِ وَ دَرَكِ الشَّقَاءِ وَ سُوْءِ الْقَضَاءِ وَ شَمَاتَةِ الْأَعْدَاءِ
বাংলায় উচ্চারণ:- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন জাহদিল বালায়ি ওয়া দারাকিশ শাক্বায়ি ওয়া সুয়িল ক্বাজায়ি ওয়া শামাতাতিল আ’দায়ি।’
৩) اَللَّهُمَّ اِنِّى اَسْئَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِىْ دِيْنِى وَ دُنْيَاىَ وَ اَهْلِىْ وَ مَالِىْ
বাংলায় উচ্চারণ:- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফি দ্বীনি ওয়া দুনিয়ায়া ওয়া আহলি ওয়া মালি।’ (আবু দাউদ, মিশকাত)
৪) اَللَّهُمَّ اِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّىْ
বাংলায় উচ্চারণ:- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি।’
৫) اَللَّهُمَّ اِنِّى اَسْئَلُكَ الْهُدَى وَ التُّقَى وَ الْعَفَافَ وَالْغِنَى
বাংলায় উচ্চারণ:- ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা ওয়াত্তুক্বা ওয়াল আফাফা ওয়াল গিনা।’
৬) يَا حَىُّ يَا قَيُّوُمُ بِرَحْمَتِكَ اَسْتَغَيْثُ
বাংলায় উচ্চারণ : ‘ইয়া হাইয়্যু, ইয়া কায়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগিছ।’
শবে বরাতের রোজা কয়টি কবে ২০২৪
শবেবরাতে ইবাদত বন্দেগীর পাশাপাশি মুমিন মুসলমানগণ রোজা রেখে থাকেন। এছাড়াও অনেকে শবেবরাতের রোজা সম্পর্কে জানতে চান। শবে বরাতের তারিখ অর্থাৎ ১৫ ই শাবান রোজা রাখা সুন্নত তবে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজা রাখা উত্তম।
শবেবরাতে রোজা রাখার বিষয়ে হাদিসে স্পষ্ট কোন ধারণা না থাকলেও রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, প্রতি মাসে তিনটি করে রোজা রাখা, সারা বছর রোজা রাখার সমান (বুখারী ১১৫৯)
তবে একটি দুর্বল হাদিসে বলা হয়েছে , ”শবে বরাতের পরবর্তী দিনটিতে রোজা রাখ”
শবে বরাতের ফজিলত
শবে বরাতের রাত অন্য রাতের মতো নয়। এই রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের মাফ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। এই সম্পর্কে হজরত মুয়ায ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআ’লা অর্ধ-শাবানের রাতে সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যাক্তি ব্যতিত বাকি সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’
শবে বরাত কি বিদআত ?
না, শবে বরাত বিদআত নয়। তবে সবাই শবে বরাতকে কেন্দ্র করে অনেকে বিদআত ও কুসংস্কারে জড়িয়ে পড়ে যা সম্পূর্ণ হারাম। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা দীনের মাঝে নতুন বিষয় আবিষ্কার করা থেকে বিরত থাক। কারণ, প্রত্যেক নতুন বিষয়ই বিদআত। আর প্রতিটি বিদআতের পরিণাম গোমরাহি বা ভ্রষ্টতা।’ তিনি আরো বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের দীনের মধ্যে এমন নতুন বিষয় তৈরি করবে, যা আমাদের অন্তর্গত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত হবে।’
নিচে শবে বরাতকে কেন্দ্র কিছু বিদআত এর নাম দেওয়া হলো যা থেকে আমাদের দূরে থাকা উচিত।
- আলোকসজ্জা করা
- আতশবাজি করা
- হালুয়া-রুটি খাওয়া
- প্রাণীর আদলে রুটি মিষ্টান্ন
- মৃতদের আত্মা দুনিয়ায় পুনঃআগমন
- নির্দিষ্ট নিয়মে নফল নামাজ পড়া
শবে বরাত অর্থ কি ?
”শব” শব্দের অর্থ রাত এবং ”বরাত” শব্দের অর্থ মুক্তি অর্থাৎ শবে বরাত অর্থ হল মুক্তির রাত। এই রাতে আল্লাহ তার পাপী বান্দাদের ক্ষমা করেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। এজন্য এ রাতকে শবে বরাত বলা হয়।
শবে বরাত কি বিদআত ?
না, শবে বরাত বিদআত নয়। তবে সবাই শবে বরাতকে কেন্দ্র করে অনেকে বিদআত ও কুসংস্কারে জড়িয়ে পড়ে যা সম্পূর্ণ হারাম। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা দীনের মাঝে নতুন বিষয় আবিষ্কার করা থেকে বিরত থাক। কারণ, প্রত্যেক নতুন বিষয়ই বিদআত। আর প্রতিটি বিদআতের পরিণাম গোমরাহি বা ভ্রষ্টতা।’ তিনি আরো বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের দীনের মধ্যে এমন নতুন বিষয় তৈরি করবে, যা আমাদের অন্তর্গত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত হবে।’
নিচে শবে বরাতকে কেন্দ্র কিছু বিদআত এর নাম দেওয়া হলো যা থেকে আমাদের দূরে থাকা উচিত।
আলোকসজ্জা করা
আতশবাজি করা
হালুয়া-রুটি খাওয়া
প্রাণীর আদলে রুটি মিষ্টান্ন
মৃতদের আত্মা দুনিয়ায় পুনঃআগমন
নির্দিষ্ট নিয়মে নফল নামাজ পড়া
One thought on “শবে বরাতের বিশেষ আমল এবং নামাজ ও রোজার নিয়ম ফজিলত সমূহ ২০২৪”