১৮ই ডিসেম্বর অধিক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে শুরু হয়ে গেল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের হিড়িক। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি না ভাঙ্গার কথা বলা হলেও তারা এগুলোর তোয়াক্কা করছেন না তারা বারবার প্রতিপক্ষের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছেন।
সারাদেশে ২১১ জন প্রার্থীদের প্রার্থীর উপর নির্বাচনী আচরণ নির্বাচনী আচরণ বিধি নিষেধ না মানার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে ৯১ জন আওয়ামী লীগ প্রার্থী। এই ৯১ জনের ভিতরে ৫২ জন বর্তমান সংসদ সদস্য। আর ভুক্তভোগীরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগের কর্মীরা যেন হিংস্র হয়ে গেছে। নির্বাচনের প্রচারণায় তারা স্বতন্ত্র দলের প্রার্থীদের উপর বারবার হামলা করছেন। গত পাঁচ দিনে ৩৬ টি সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ভুক্তভোগীরা হলেন স্বতন্ত্র দলের প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নিজেদের ক্ষমতা জোর খাটিয়ে স্বতন্ত্র দলের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা নষ্ট করার ফন্দি আটছেন।
নির্বাচন কমিশন এর সব ঘটনার প্রতিবেদন যাচাই করে, বেশিরভাগ প্রার্থীকে সতর্ক করেছেন এবং বেশ কিছু ক্ষেত্রে জরিমানার করা হচ্ছে। প্রার্থীদের কাছ থেকে সংঘর্ষের কারণ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে একটি প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য নির্বাচনী আচরণ বিধি ভাঙ্গার জন্য প্রার্থিতা বাতিল করার ক্ষমতা রাখে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ
বরাদ্দ দেওয়ার পর থেকে সারাদেশে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা কে কেন্দ্র করে ২১১ টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত নির্বাচন অনুসন্ধান টিম এ সব সংঘর্ষের প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশিনে পাঠাতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের হিড়িক
২১১ টি সংঘর্ষে ঘটনায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৯১ জন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ২১ জন,জাপার প্রার্থী ৮জন ও অন্যান্য সেক্টরে কর্মরত কর্মরত সরকারি কর্মরত বিভিন্ন অফিসারদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষের প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এই ৯১ জনের ভিতরে ৫২ জন বর্তমান সংসদ সদস্য।
নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে প্রথমবার আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য প্রার্থীদের সর্তকতা করা হচ্ছে কিছু কিছু প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে ডাকা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রার্থীদের জরিমানা করা হচ্ছে। প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে ডাকা হচ্ছে তাদেরকে বিভিন্ন আইনে সতর্ক করে অঙ্গীকারনামা লেখানো হচ্ছে।
গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, লালমনিরহাট ১ আসনে আওয়ামী লীগ পদপ্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিকী ওরফে শ্যামল এর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমানের কর্মী ও সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার গণসংযোগে বাধা এবং তার গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।
এ ঘটনার কারণে নিবাচন অনুসন্ধান টিম একটি প্রতিবেধন পাঠায় নির্বাচন কমিশনে।আওয়ামী লীগ পদপ্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিকী ওরফে শ্যামল কে আজ শনিবার নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত থেকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়ে।
এই দিকে মাদারীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য শাহজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ বিডি অঙ্গের প্রমাণ পাওয়া গেছে তিনি নির্বাচনী প্রচারণার এক সমাবেশে নৌকার বাইরে গিয়ে কেউ কথা বললে গলা নামিয়ে দেওয়ার হুমকিতে তার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নির্বাচন কমিশন থেকে তাকেও এর কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের হিড়িক
আচরণবিধি ভঙ্গে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাচন অনুসন্ধান দল অনেক প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন।
আওয়ামী লীগের বরগুনা ১ আসনের প্রার্থী দি ধীরেন্দ্রনাথ দেবনাথের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভাঙ্গার সত্যতা মিলেছে ।এজন্য অনুসন্ধান টিম তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করার সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশনে।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের আরেক পদপ্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য গাজীপুর 4 আসনের এমপি মেহের আফরোজ এর ব্যক্তিগত সহকারি মাজিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সুপারিশ করেছে নির্বাচন অনুসন্দা দল।
কুষ্টিয়া ৪ আসনের নৌকার এক কর্মীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র পদ প্রার্থীর সমর্থকদের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তাকে একদিনের কারাদণ্ড দিয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
গত বৃহস্পতিবার নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের তিনটি নির্বাচনী আসনে চারজন প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ ভঙ্গের সত্যতা মিলায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছ নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম শাখাওয়াত হোসেন হাসানের মতে নির্বাচন আচরণ ভঙ্গের কারণে নির্বাচন কমিশন অনেক ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারেন এবং তারা প্রার্থিতা বাতিলও করতে পারেন কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সতর্কতা করা হচ্ছে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে জরিমানা করা হচ্ছে।
এই দিকে নির্বাচন কমিশন থেকে জেলা রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন প্রার্থীদের উপর নজরদারি রাখা হয় এবং তারা যেন প্রার্থীদের জানিয়ে রাখে নির্বাচন আচরণবিধি নিষেধ সম্পর্কে।
ভালো নিউজ